সোমবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৩:০৮

শিরোনাম :
প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ বরিশাল সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাদিস মীরের মনোনয়ন দাখিল বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন,বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ! বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এসএম জাকির হোসেনের মনোনয়নপত্র দাখিল
বরিশালে বর্ষ বরণে ব্যাপক প্রস্তুতি, ইলিশের গায়ে আগুন

বরিশালে বর্ষ বরণে ব্যাপক প্রস্তুতি, ইলিশের গায়ে আগুন

dynamic-sidebar

এস এল টি তুহিন : বরিশালে নানা আয়োজনে বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচী এবং চারুকলা বরিশাল। গত কয়েকদিন ধরে দিনরাত পরিশ্রম করে পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ বাংলা নববর্ষ উদযাপেনের নানা উপকরণ তৈরী করেছেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।এদিকে পহেলা বৈশাখ পান্তা ইলিশ সংস্কৃতির কারণে বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ইলিশের দাম। এতে অসস্থি বেড়েছে জনসাধারনের মাঝে। অপরদিকে বাংলা নববর্ষ উদযাপন নির্বিঘ্ন এবং শান্তিপূর্ণ করতে নানামুখি পদক্ষেপ নিয়েছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে পহেলা বৈশাখের সকল আয়োজন শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমীন। অশুভ শক্তির বিনাশ এবং অতীতের জরাজীর্নতা পেছনে ফেলে পৃথিবীর সকল মানুষের মঙ্গল কামনার উদ্দেশ্যে গত ৩৫ বছর ধরে মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ নানা আয়োজন করে আসছে বরিশাল উদীচী। এই ধারাবাহিকতায় এবারও ৩৬তম মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করার প্রস্তুতি নিয়েছে উদীচী। গত কয়েক দিন ধরে উদীচীর কর্মীরা হাতপাখা, ক্যাপ, মুখোশ, হাতি, হাঁস, অশুভ শক্তির প্রতীক প্যাঁচা এবং বয়স্ক দাদার সাথে মেলায় যাওয়ার প্রতীক তৈরী করেছেন। এখন শেষ মূহূর্তের রং-তুলির কাজ করছেন তারা। উদীচী বরিশালের সহসভাপতি আবুল খায়ের সবুজ জানান, বাংলা নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। ওইদিন সাড়ে ৬টায় বিএম স্কুল মাঠে প্রভাতী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানমালা শুরু হবে। এরপর ঢাক উৎসব, রাখী বন্ধন, উত্তরীয় এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে সকাল সাড়ে ৮টায় মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করবে উদীচী। এছাড়া সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও বিএম স্কুল মাঠে ৩ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান সাংস্কৃতিক সংগঠক সবুজ। এদিকে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের জন্য চারুকলা বরিশালের পক্ষ থেকেও নানা আয়োজন করা হয়েছে। নগরীর সদর রোডের সিটি কলেজ চত্ত্বরে ওইদিন সকাল ৭টায় শুরু হবে বাংলা নববর্ষ বরণের দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি। সেখানে নৃত্য, সংগীত এবং আবৃত্তি পরিবেশন করবে নজরু সাংস্কৃতিক জোট, নৃত্যাঙ্গন এবং খেয়ালী গ্রুপ থিয়েটার। এরপর সেখানে গুনীজন ও মুক্তিযোদ্ধাদের রাখি পড়ানো সহ সন্মাননা প্রদান এবং ৭টা ৫৯ মিনিটে সিটি কলেজ মাঠ থেক মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করার কথা জানান চারুকলা বরিশালের সাধারন সম্পাদক অসীম বনিক। এদিকে বাংলা বর্ষ বরণের সকল আয়োজন নির্বিঘ্ন এবং শান্তিপূর্ণ করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে পুলিশ কমিশনারের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমীন বলেন, জঙ্গি ও উগ্রপন্থীরা এখনো থেমে নেই। তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার অংশ হিসেবে ওইদিন সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে বাংলা নববর্ষের সকল অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশ দেন তিনি। এছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে মঙ্গল শোভাযাত্রায় মুখোশ, দিয়াশলাই, লাইটার কিংবা আঁতশবাজী নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিরাপত্তারস্বার্থে প্রতিটি বৈশাখী মেলায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের তাগিদ দেন পুলিশ কমিশনার।অপরদিকে বাংলা নববর্ষে পান্তা ইলিশ আয়োজনের উদ্দেশ্যে বাজারে গিয়ে বড় ধরনের হোচট খাচ্ছেন ক্রেতারা। এখন নদ- নদীতে জাঁটকা শিকারে নিষেধাজ্ঞা চলছে। তাই বরিশালের মোকামে এমনিতেই ইলিশের সরবরাহ কম। এর উপর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ইলিশের গায়ে যেন আগুন লেগেছে। ক্রেতা সাধারণ ইলিশের দাম শুনেই পিছিয়ে যাচ্ছেন পান্তা ইলিশ খাওয়ার আয়োজন থেকে। ইলিশ ক্রেতা গোপাল সরকার বলেন, ছেলে- মেয়েদের আবদার মেটাতে পহেলা বৈশাখের জন্য ইলিশ কিনতে গিয়েছিলেন পোর্ট রোড মোকামে। কিন্তু অস্বাভাবিক দাম হওয়ায় তিনি ইলিশ না কিনেই ফিরে যান। তার মতে, পহেলা বৈশাখ পান্তা ইলিশ সংস্কৃতি বাঙালী সাংস্কৃতির অংশ নয়। কোন মহল থেকে পান্তা-ইলিশ সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি পহেলা বৈশাখ পান্তা ইলিশের আয়োজন সরকারীভাবে নিষিদ্ধ করার দাবী জানান। পোর্ট রোডের ইলিশ আড়তদার জহির সিকদার জানান, চৈত্রের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ ইলিশের বাজার চড়া হয়। ঢাকার ব্যবসায়ীরা আগে থেকে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ মজুদ করে হিমাগারে রেখেছিলো তারা দাম বাড়িয়ে তাদের হিমাগারে থাকা ইলিশ মাছ বাজারে ছেড়ে দিয়ে বিপুল অংকের মুনাফা করে। হিমাগারের মাছ বাজারে আসায় দাম তুলনামূলক কিছুটা কমেছে। নইলে ইলিশের বাজার আরও চড়া থাকতো বলে তিনি জানান। ইলিশ আড়ৎদার মো. নাসির উদ্দিন জানান, বরিশালের মোকামে ২ কেজি সাইজের ইলিশ আসে খুবই কম। আজ ২ কেজি সাইজের প্রতিমণ ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২ লাখ থেকে ২ লাখ ২০ হাজার, দেড় কেজির উপরের সাইজের প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে দেড় লাখ থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার, ১ কেজি থেকে ১২০০ গ্রাম সাইজের প্রতি মণ ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার, রাপ্তানীযোগ্য এলসি সাইজের (৬শ’ গ্রাম থেকে ৯শ’ গ্রাম) প্রতিমণ ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা এবং মাঝারী সাইজের (৪শ’ থেকে ৫শ’ গ্রাম) প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায়। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাজদা রহমান বলেন, ৩০ জুন থেকে পহেলা নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশের মৌসুম। বর্তমানে বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে চাহিদা বেশী থাকায় বাজারে ইলিশের দাম কিছুটা বেড়েছে। মুক্ত বাজার অর্থনীতির কারনে ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ আবু জাফর মিয়া বলেন, পহেলা বৈশাখ ইলিশ খাওয়ার সংস্কৃতি আমদানী করা। এটা বাঙালী সাংস্কৃতির অংশ নয়, অপসংস্কৃতি। ডিমওয়ালা ইলিশ কিংবা জাঁটকা নিধন রোধ করে জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় সরকারীভাবে পহেলা বৈশাখ পান্তা-ইলিশ নিষিদ্ধ করার দাবী জানান বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনি বিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান আবু জাফর মিয়া।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net